যে কথাটি সত্য-
আজকে আমি যে ক্যাডার হয়েছি, তার পিছনে ভালবাসার মতো অদৃশ্য এক বস্তুই কিন্তু দায়ী। আর সেটা কিন্তু আমার প্রাক্তনের ভালবাসা বা চলে যাওয়া নয়।
২০২২ সালের শুরুর দিকে সাথী নামের এক মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়। তখন আমি ৬ হাজার টাকার একটা টিউশন করতাম মোহাম্মদপুরে। সেই টিউশনটা ছাড়তে বাধ্য করেছিল এই মেয়েটা।
টিউশন ছাড়ার কারণে বলেছিল ” আপনি ভালভাবে বিসিএসের প্রিপারেশন নেন। টিউশন পড়িয়ে ৪/৫ ঘন্টা নষ্ট না করে, এই সময়টা পড়াশোনায় দেন। আর আপনার টিউশনের টাকার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। আপনি টিউশন করে যত টাকা পেতেন, এই টাকাটা আপনি সময় মত পেয়ে যাবেন।”
আমি তার কথায় টিউশনটা ছেড়ে দেই এবং পড়াশোনা দৃঢ়ভাবে চালিয়ে যেতে থাকি।
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ৪৪তম বিসিএসের রিটেন হয়। রিটেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাপের টাকায় চলা মেয়েটি আমার জন্য নিজে টিউশন করিয়ে সেই ৬ হাজার টাকা পাটিয়েছে প্রতি মাসে।
তার একটাই কথা ছিল – “আপনার জন্য আমি নিজে পরিশ্রম করছি তার একটাই কারণ, আর সেটা হচ্ছে- আপনি ক্যাডার হলে সকল ব্যর্থ প্রেমিক উৎসাহ পাবে আর নিজেকে শেষ না করে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে পারবে।”
হ্যাঁ, আজ আমি ক্যাডার। আর সেই মহীয়সী নারী আমার বর্তমান অর্ধাঙ্গী- সাথী এবং আমার জীবনের নতুন গল্পের সাথী। যে নারীটাকেই এখন আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভালবাসি।
আমার স্ত্রীকেও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়েছে। কিন্তু সে পেরেছিল।কিন্তু সব নারীর সে ক্ষমতা থাকেনা বা পরিবেশ-পরিস্থিতিও এক হয়না। আমার প্রাক্তনের বেলায়ও হয়তো তা-ই হয়েছে।
তাই আমার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পের নায়িকা কিন্তু আমার প্রাক্তন নয়, আমার স্ত্রী ।
আর মানুষের জীবনে প্রাক্তন থাকতেই পারে। আমি চাই না, আপনারা আমার প্রাক্তনকে দোষী করেন বা তার নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ও’র মতো ও’ তার পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো থাকুক। আমি এটাই চাই সবসময়।
ভালবাসা যা নেয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বহুগুণ ফিরিয়েও দেয়।
পৃথিবীর সকল মানুষ সুখী হোক।
ধন্যবাদ।
লিখেছেন শাহীন আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
